ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

জেলায় আধুনিকায়ন হচ্ছে ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক, বিনামূল্যে রোগীরা পাবেন ৩২ প্রকার ঔষধ

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজার জেলার ১৯৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখছে। প্রতিটি ক্লিনিকে স্থানীয় রোগীরা প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এরই মধ্যে ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আধুনিকায়ন করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আইওএম।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এরই মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এমপি আধুনিকায়ন করা ১২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করেছেন। মহেশখালী উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক উদ্বোধন করেছেন দুইটি। স্বাধীনতার ২১ বছর পরে ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরপরই জাতির জনকের কন্যা পিতার স্বপ্ন ‘সবাই জন্য স্বাস্থ্য সেবা’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। জন্ম দেন অভিনব ধারণায় কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৪ হাজার ৪৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তৎমধ্যে কক্সবাজার জেলায় ১৯৩টি।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহবুবুর রহমান জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কক্সবাজার জেলায় ১৯৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ১০০ টি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আইওএম। বাকি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোও পর্যায়ক্রমে দ্বিতল ভবনসহ আধুনিকায়ন হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জেলায় চিকিৎসাসেবা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। গ্রামের মানুষের হাতের কাছেই পাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা।

মহেশখালী উপজেল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, আগত রোগীরা ৩২ প্রকারের ঔষধ বিনামূল্যে পাবে। জেলার ১০০ টির মধ্যে মহেশখালী আধুনিকায়ন হচ্ছে ১৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক। এই কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক অবদান রাখবে। প্রসূতি সেবাসহ বহুমূখী চিকিৎসা সেবা পাবেন রোগীরা। এই ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে স্বাস্থ্য সেবা। মা ও শিশুর পাশাপাশি প্রান্তিক জনপদের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে এই ক্লিনিক।

কক্সবাজার সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক আবুল হাসেম জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তৃণমূলে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার অভূতপুর্ব ধারণার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি তার স্বকীয় উদ্ভাবনী চিন্তার ফসল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের অভিনব ধারণা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয় তৃণমূলের জনগণের জন্য কল্যাণকর এই সফল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমটি।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা যায়, ৮ শতাংশ জমির ওপর নতুন মডেলের ক্লিনিক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ভবনে চারটি করে রুম। দুটি স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার জন্য, একটি রোগীদের ওয়েটিং রুম, আরেকটি লেবার (ডেলিভারি) রুম। বাথরুম থাকছে দুটি। প্রধানমন্ত্রী ও উপদেষ্টা শেখ হাসিনা নিজেই এর নকশা অনুমোদন করে দিয়েছেন। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য রয়েছে ১৭ সদস্যের কমিউনিটি গ্রুপ- সিজি। সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল অংশ নিয়ে এটি গঠিত। গ্রুপ ন্যূনতম চারজন নারী সদস্য থাকেন। এই গ্রুপের প্রধান থাকেন সংশিষ্ট ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য। আর জমিদাতা থাকেন ভাইস চেয়ারম্যান। উপদেষ্টা হিসেবে থাকেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। আবার সিজিকে সহযোগিতা করার জন্য থাকে ১৭ সদস্যের কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ।

পাঠকের মতামত: